ঋতুর পরিবর্তন আমরা সবাই জানি যে বার্ষিক গতির জন্য ঋতু পরিবর্তন হয়। বার্ষিক
গতির কারণে পৃথিবীর এক সময় সূর্যের থেকে দূরত্ব চলে যায়। আবার একসময় কাছে চলে
আসে, পৃথিবী সূর্য থেকে দূরে থাকে তখন শীতকাল আবার যখন কাছে চলে আসে তখন
গ্রীষ্মকাল। ঋতুর পরিবর্তনের এটি একটি কারণ হলেও এর দূরত্ব বাড়া বা কমা ঋতু
পরিবর্তনের খুব একটা প্রভাব ফেলেনা।
পোস্ট সুচিপত্রঃ
যেমন সূর্য থেকে বুধ গ্রহ দূরত্ব অপেক্ষা শনিগ্রহের অপেক্ষা বেশি হলেও এর
তাপমাত্রা কম হয় এবং শনির গ্রহের তাপমাত্রা বেশি হয়। অর্থাৎ এখানে দূরত্ব
প্রভাব ফেলতে পারেনি যদি একমাত্র কারণ হত তাহলে বছরে দুবার শীতকাল দুবার
গ্রীষ্মকাল হত।
ঋতু পরিবর্তন কেন হয়? বাংলাদেশের ছয়টি ঋতু নিয়ে বিস্তারিত
ঠিক কি কারনে ঋতু পরিবর্তন হয় সেটি সবাইকে জানা দরকার। ঋতু পরিবর্তনের জন্য
দায়ী পৃথিবীর বার্ষিক গতি পৃথিবী হেরে থাকার কারণে। যদি বার্ষিক গতি না থাকতো
তাহলে এক এক দেশে এক একটি ঋতু বিরাজ করত। এমনকি পৃথিবী মেরু যদি সূর্যের
সাথে সমাপেক্ষ থাকতো তাহলে একই ঋতু থাকতো।
অর্থাৎ বার্ষিক গতি সূর্য র সাপেক্ষ হেলে থাকায় ঋতুর পরিবর্তন ঘটায়। এর এই
কারণে সূর্যের এক এক সময়ে কিরণ দেয়। সূর্যের এই ভিন্নতার কারণে ঋতুর পরিবর্তন
হয়, যেমন মধ্যপ্রাচ্যে সূর্য সারা বছর খাড়া ভাবে কিরণ দেওয়াই সেখানে ঋতু
পরিবর্তন হয় না।
আরও পরুনঃ আযানের সময় ভুলেও এই পাঁচটি কাজ কখনো করা যাবে না
সূর্যের এই কিরণের ভিন্নতার কারণে সূর্যের কিরণ বায়ুস্থল ভেদ করার দৈর্ঘ্য
বায়ুস্থলে ভিন্ন হয়। সূর্য যখন খারাপ হবে কিরণ দেয় তখন যতটুকু বায়ুস্থল ভেদ
করতে হয়। এবং সূর্য ধীরে কিরণ দিলে বায়ুস্থল ভেদ করতে হয়, সূর্যের
দূরত্বকে কমিয়ে দেয়।
বাংলাদেশের ছয়টি ঋতু নিয়ে আলোচনা
বাংলাদেশের ছয়টি ঋতু নিয়ে আলোচনাঃ সুজলা সুফলা শস্য শ্যামল আমাদের এই বাংলাদেশ।
বাংলাদেশের ঋতু বৈচিত্রের সৌন্দর্যের লীলাভূমি, ঋতু পরিক্রমায় এখানে দেখা যায়
বৈচিত্রময় রূপ। এবং বাংলাদেশ বৈচিত্রময় ঋতু দেশ পৃথিবীর আর কোথাও নেই।
বাংলাদেশের ছয়টি ঋতু ও বাংলা ১২টি মাসের নাম নিচে উল্লেখ করা হলো।
গ্রীষ্মকাল ঋতু পরিবর্তন কেন হয়? বাংলাদেশের ছয়টি ঋতু নিয়ে
বিস্তারিত
গ্রীষ্মকালঃ বাংলাদেশের ছয়টি ঋতুর মধ্য প্রথম ঋতু গ্রীষ্মকাল ও বাংলায় বৈশাখ ও
জ্যৈষ্ঠ দুই মাস গ্রীষ্মকাল। এই সময় খুব গরম পড়ে ও বিকেলের দিকে ঝড় বৃষ্টি
হয়
গ্রীষ্মকালের এই ঝড় বৃষ্টিকে কালবৈশাখী ঝড় বলে। গ্রীষ্মকালে সূর্যের তাপে
পুকুর, খাল, বিল, নদী, নালা, সব শুকিয়ে যায়। এবং কৃষকেরা প্রাণের অভাবে চাষবাদ
করতে পারে না ফসল উৎপাদন করতে অনেক সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। এবং কৃষকদের খুব
কষ্টের জীবন যাপন করতে বাধ্য হয়।
এর ফলে মানুষের খুব জলের কষ্ট দেখা যায়। আমাদের দেশ কৃষি প্রধান দেশ, তাই
চাষীরা এই গ্রীষ্মকালে বৃষ্টির অপেক্ষায় থাকে। গরমে কষ্ট হলেও এই সময়ে আম,
জাম, কাঁঠাল, প্রভৃতি রসালো ফল ও পাকে।
এই সময় বেলি, জু্ই, চাপা, প্রভৃতি সুগন্ধ ফুল ফোটে গ্রীষ্মকালের গরমে মানুষের
কষ্ট হলেও এর মধ্যে নব বর্ষ, জামাই ষষ্ঠা, রবীন্দ্রনাথের জন্মদিন মানুষের মনে
এনে দেয় আনন্দের অনুভূতি।
বর্ষাকাল ঋতু পরিবর্তন কেন হয়? বাংলাদেশের ছয়টি ঋতু নিয়ে
বিস্তারিত
বর্ষাকালঃ বাংলাদেশে ছয়টি ঋতুর দেশ। বর্ষাকাল বছরের অন্যতম সেরা ঋতু যাকে
বর্ষাকাল বলা হয়। ছয়টি ঋতুর মধ্যেও বর্ষাকাল দ্বিতীয়। আষাঢ় শ্রাবণ এই
দুই মাস বর্ষা আরম্ভ হয় জৈষ্ঠ্য মাসের মাঝামাঝি থেকে এবং তার প্রভাব থাকে
আশ্বিন মাস পর্যন্ত।বর্ষার আগমনে গাছপালা, মানুষ জীবনে আনন্দে মেতে ওঠে।
এই সময়ে আকাশে কালো মেঘে ঢাকা থাকে।
বর্ষার কারণ ঋতু পরিবর্তন কেন
হয়? বাংলাদেশের ছয়টি ঋতু নিয়ে বিস্তারিত
বর্ষার কারণঃ এই বর্ষাকালে রয়েছে ভৌগলিক কারণ, গ্রীষ্মকালে মৌসুমী বায়ু ভারত
মহাসাগর ও বঙ্গোপসাগরের উপর দিয়ে প্রভাবিত হয়। এবং উত্তর-পূর্বে বয়ে যায়
প্রচুর পরিমাণে জলে বাসপ। হিমালয়ের গায়ে বাধা প্রাপ্ত হয়ে ভারতে প্রচুর
পরিমাণে বৃষ্টি হয়।
প্রকৃতি অবস্থা ঋতু পরিবর্তন
কেন হয়? বাংলাদেশের ছয়টি ঋতু নিয়ে বিস্তারিত
প্রকৃতিক অবস্থাঃ আষাঢ় ও শ্রাবণে এই দুই মাসে কখনো অভিপ্রান্ত বর্ষণ আবার কখনো
ঝিমঝিম বৃষ্টি পড়ে। নদী-নালা, পথ ঘাটে জলে থৈথৈ করে। বর্ষার আগমনে
নির্জীব প্রকৃতি যেন জীবন ফিরে পায় এবং সজিব হয়ে ওঠে।
এ সময় আকাশ কালো মেঘে ঢাকা থাকে। বর্ষাকালে কদম, জুঁই, ফুল ফোটে। কৃষকেরা
আনন্দে মেতে ওঠে। চারিদিকে প্রাণের সারা জেগে উঠে। বর্ষাকালে কলেরা
টাইফয়েড ও ম্যালেরিয়া রোগের প্রকাশ দেখা দেয়।
শরৎকাল ঋতু পরিবর্তন কেন হয়?
বাংলাদেশের ছয়টি ঋতু নিয়ে বিস্তারিত
শরৎকালঃ বাংলাদেশের ছয়টি ঋতুর মধ্য শরৎকাল তৃতীয়। মাত্র আশ্বিন ও কার্তিক এই
দুই মাস শরৎকাল, এই সময় আকাশের মেঘ বিদায় জানাই। আকাশের বুকে সাদা সাদা মেঘ
তুলার মত ভেসে বেড়ায় আকাশের রং গারো নীল। শরৎকালে কাশফুল ও শিউলি
ফুল ফোট।
শরৎকাল সমগ্র পরিবেশ মাতোয়ারা করে তুলে। এবং অন্যদিকে চলতে থাকে বাঙালির
শ্রেষ্ঠ উৎসবের আয়োজন। সবমিলিয়ে এই ঋতুতে প্রকৃতির অপরূপ সৌন্দর্যের আরাধনায়
শরৎকালে মানুষ মন মেতে ওঠে।
শরৎকালের প্রকৃতির সৌন্দর্য
শরৎকালের প্রকৃতির সৌন্দর্যঃ বর্ষার অবসানে সৌন্দর্যের মাধুরী। প্রকৃতি এ সময়
আগে থেকে আরো মনো হওয়ার হয়ে ওঠে। পুকুরে মিলে পর্দায় ফুটে শেফালী টগর
মল্লিকা গাঁদা প্রভৃতি ফুল অপরূপ করে তোলে এ ঋতুতে সবুজ প্রাণে ছুঁয়ে ওঠে বন ও
প্রকৃতি।
হেমন্তকাল ঋতু পরিবর্তন কেন হয়? বাংলাদেশের ছয়টি ঋতু নিয়ে
বিস্তারিত
হেমন্তকালঃ বাংলাদেশের ছয়টি ঋতুর মধ্য চতুর্থ হেমন্তকাল। কার্তিক ও
অগ্রহায়নের মাসের সমন্বয়ে গঠিত হয। হেমন্তের শেষে শুরু হয় শীতকাল,
তাই হেমন্তকালকে বলা হয় শীতের পূর্বাভাস।
হেমন্তকালের প্রকৃতি ঋতু পরিবর্তন কেন হয়? বাংলাদেশের ছয়টি ঋতু
নিয়ে বিস্তারিত
হেমন্তকালের প্রকৃতিঃ হেমন্ত মানেই পাকা ধানের ঋতু হেমন্ত আসলেই পাকা ধান
সোনালী আলোয় উদ্ভাসিত হয় বাংলার মাঠ ঘাট প্রান্তর খুশির আলোয় কৃষকদের
ঘরে ঘরে। চারদিক হয় উৎসবমুখর, হেমন্তের হিম বাতাস কোন কোনে শীতের আগমনী বার্তা
ঘোষণা করে।
এই সময় প্রকৃতি এক সাজে সেজে ওঠে। বর্ষার জল শুকিয়ে গিয়ে মাঠ ঘাট হয়ে ওঠে
অন্যান্য। কার্তিক এবং অগ্রহায়ন মিলিয়ে এই হেমন্তকাল এই এক বিশেষ ঋতুর কারণ
এই সময় কিছুটা শীত শীত ভাব লাগে। কিন্তু শীতের তীব্রতা থাকে না।
এই হেমন্তকালের শেষেই কৃষকেরা সারা বছরের ফসল ঘরে তুলে ও পাকা ধান গোলায় ওঠে।
আর শুরু হয় আমাদের সকলের প্রিয় নবান্ন উৎসব।
শীতকাল ঋতু পরিবর্তন কেন হয়? বাংলাদেশের ছয়টি ঋতু নিয়ে
বিস্তারিত
শীতকালঃ বাংলাদেশের ছয়টি ঋতুর মধ্য পঞ্চম শীতকাল। ঋতু পরিবর্তনে আমাদের
বাংলাদেশে শীত
আসে কুয়াশা উঁলের চাঁদর মুড়ি দিয়ে।হিমেল বাতাসের প্রভাবে আর কখনো শীত পড়ে
বাংলাদেশের প্রকৃতির উপর।
বাংলাদেশের শীতের প্রকৃতি ঋতু
পরিবর্তন কেন হয়? বাংলাদেশের ছয়টি ঋতু নিয়ে বিস্তারিত
বাংলাদেশের শীতের প্রকৃতিঃ বাংলাদেশের শীতকালে প্রায় সময় কোন কুয়াশা এবং কোন
কোন দিন সূর্যের মুখ দেখা যায় না। এবং গোসল পর্যন্ত করা যায় না, কোন কোন শীতে
পানি স্পর্শ করা যায় না।তাই গরম পানি পান করতে হয়।বাংলাদেশের গ্রাম অঞ্চলে
কৃষক ও সাধারণ মানুষের শীতের তীব্রতার কারণে জনজীবন কষ্ট ও গরম কাপড়ের
অভাব হয়। সারারাত খর কোটা জ্বালিয়ে সকালে অপেক্ষা করে সূর্যের তাপের
জন্য।
বসন্তকাল ঋতু পরিবর্তন কেন হয়? বাংলাদেশের ছয়টি ঋতু নিয়ে
বিস্তারিত
বসন্তকালঃ বাংলাদেশের ছয়টি ঋতুর মধ্য বসন্তকাল ষষ্ঠ উত্তরের বাতাস বিদায়
নেওয়ার পর শীতের আহমেদ কমে যায়। এরপর দক্ষিণের বাতাস বইতে শুরু করে এবং আসে
বসন্তকাল মাস নিয়ে হয় বসন্তকাল। এটি বছরের শেষ ঋতু, বসন্তকালকে ঋতুরাজ অথবা
ঋতুর রাজা বলা হয়।
প্রাকৃতিক অবস্থা ঋতু পরিবর্তন
কেন হয়? বাংলাদেশের ছয়টি ঋতু নিয়ে বিস্তারিত
প্রাকৃতিক অবস্থাঃ শীতকালে কিছু কিছু গাছের পাতা ঝরে যায়, বসন্তকালে সেসব
গাছের নতুন কচি পাতা জন্মায়। এই সময় শীত থাকে না, আবার বিশেষ গরম পড়ে না,
তার ফলে আবহাওয়া বেশ আরামদায়ক থাকে। প্রকৃতি এই সময় সুন্দর সাজে সেজে ওঠে,
পলাশ, কৃষ্ণচূড়া, রাধাচূড়া, অশোক, শিমুল, বকুল, চাপা, প্রভৃতি ফুল ফোটে, ও আম
গাছে মুকুল দেখা যায়।
শেষ কথা, একসময় বসন্তের বিদায় নেওয়ার সময় এগিয়ে আসে, শেষ
হয়ে আসে একটি বছর। ধীরে ধীরে সূর্যের উত্তাপ ক্রমশ বাড়তে থাকে। এরপর
শুরু হয় নতুন একটি বছর। আশা করি কন্টেনটি সবাইকে ভালো লাগবে আজ তাহলে এই
পর্যন্তই কমান্ড করে জানাবেন সবাইকে ধন্যবাদ।
rhblogger নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url