আখের রস হতে চিনি ও গুড় তৈরির প্রক্রিয়া


মেশিন থেকে পড়ছে ঝকঝকে পরিষ্কার ও স্বচ্ছ সাদা চিনি। অথচ এই চিনি তৈরি হচ্ছে এমন কালচে অপরিচ্ছন্ন আখের রস হতে। এই রস বের করা হচ্ছে এমন বড় বড় ক্রাশার মেশিনের সাহায্যে। এইগুলো সহ আরো বেশ কিছু জটিল প্রক্রিয়ার মাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের কেমিক্যাল মিশিয়ে উৎপাদিত আখের রস হতে চিনি ও গুড় তৈরির প্রক্রিয়া পৌঁছে যাচ্ছে আপনাদের রান্না ঘরে।

আখের রস হতে চিনি ও গুড় তৈরির প্রক্রিয়া

পোস্ট সুচিপত্রঃ

বাজারে যত চিনি দেখা যায় তার ৯০% এই সাদা চিনি আখের রস হতে চিনি ও গুড় তৈরির প্রক্রিয়া 

বাজারে যত চিনি দেখা যায় তার ৯০% এই সাদা চিনি। আজকে আপনাদেরকে জানানোর চেষ্টা করব কিভাবে আগের রস হতে পরিষ্কার ঝকঝকে সাদা চিনি উৎপাদিত হয়। দক্ষিণ অঞ্চলের অন্যতম বৃহৎ ও প্রধান চিনিকল মোবারকগঞ্জ সুগার মিলে। এই চিনি কলটি হচ্ছে ঝিনাইদহ জেলায় অবস্থিত কালীগঞ্জ থানার অন্তর্গত মোবারকগঞ্জ চিনিকল। আজকে আপনাদেরকে জানানোর চেষ্টা করব যে কিভাবে আখের রস থেকে সাদা চিনির তৈরির প্রক্রিয়া


আখের রস হতে চিনি ও গুড় তৈরির প্রক্রিয়া

সাল হতে মেশিনটি ১৯৬৫ সালে স্থাপিত হলেও এর উৎপাদন কার্যক্রম শুরু হয় ১৯৬৮

আখের রস হতে চিনি ও গুড় তৈরির প্রক্রিয়ার মেশিনটি ১৯৬৫ সালে স্থাপিত হলেও এর উৎপাদন কার্যক্রম শুরু হয় ১৯৬৮ সাল হতে। স্বাধীনতা লাভের পর থেকে ১৯৭২ সালে সরকারি প্রতিষ্ঠান থেকে রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান হিসেবে ঘোষণা করা হয়।

বর্তমানে যার উৎপাদন ক্ষমতা প্রায় ১২৫০০ মেট্রিক টন। মোট ১৯০জমির উপরে স্থাপিত এই চিনি শিল্পের প্রধান উপকরণ হচ্ছে আখ। যা মিলে আওতাধীন ৪২ হাজার একর জমিতে আখ ছাড়াও আশেপাশের বিভিন্ন জেলার এলাকা হতে সংগ্রহ করে। এরকম টলির মাধ্যমে টেনে মিলে আনা হয়। চিনি তৈররির জন্য এরকম আখ বোঝাই সারি সারি ট্রাকের আসা-যাওয়া যেন এক এলাহি কাণ্ড।


আখের রস হতে চিনি ও গুড় তৈরির প্রক্রিয়া


এরপর গাড়ি হতে একে একে সেই আখ গুলো বেশ করে গাড়ির উপরে তুলে দেওয়া হয় কাটিং মেশিনে অত্যন্ত ধারালো ব্লেডের মাধ্যমে বড় বড় লম্বা লম্বা আর গুলোকে কেটে টুকরো টুকরো করা হয়। এরপর একটি চপার মেশিনের মাধ্যমে এগুলো পিষে রস বের করা হয়।পরবর্তীতে একটি ক্রিয়েসিং মেশিনে ঢালা হয় যাতে আখের রস ছিটকে পুরোপুরি আলাদা হয়ে যাই।

পাশাপাশি দেওয়া হয় পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি আখের রস হতে চিনি ও গুড় তৈরির প্রক্রিয়া 

পাশাপাশি দেওয়া হয় পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি। তবে এই দেখলে চিনির প্রতি আপনার অনীহা জন্মাতে পারে। কেননা পরিষ্কার না করেই রস বের করা হয় এবং তাতে বিভিন্ন রকমের ময়লা ও কালো স্তর দেখা যায়। একটি ফিল্টার মেশিনের মাধ্যমে রস খোঁসা হতে আলাদা করা হয়। এবং ট্রেরে মাধ্যমে চলে যাই নির্দিষ্ট স্থানে। আখের আলাদা হওয়া এই খোশা গুলোকে ভোকাস বলা হয়।

যেগুলো তাদের জ্বালানি হিসেবে পরবর্তীতে ব্যবহার করা হয় আখের রস হতে চিনি ও গুড় তৈরির প্রক্রিয়া 

যেগুলো তাদের জ্বালানি হিসেবে পরবর্তীতে ব্যবহার করা হয়। এটা এতটা শক্তিশালী জ্বালানি যে সুগার ইন্ডাস্ট্রিজ সকল প্রকার বৈদ্যুতিক ও জ্বালানি খরচ এটা হতে পূরণ করা হয়। আলাদা করার মেশিনকে মিলহাউজ বলা হয়ে থাক



মিলহাউজ হতে উৎপাদিত রস প্রসেস হাউজে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। আর প্রসেস হতে চিনির দানা তৈরি করা হয়। যেখানে বয়লারের মত বড় বড় জারে আখের রস কে ৪৫ ডিগ্রি সেন্টিরেট তাপমাত্রায় গরম করে সনো সালফার মিশ্রিত  করা হয়। যার কারণে রসে থাকা এসিডিটি কম হয়। পাশাপাশি মিল্ক অফ লাইন সহ বিভিন্ন কেমিক্যাল মেশানো হয়। 

এরপর ১৪৪ ডিগ্রি তাপমাত্রায় গরম করা হয় আখের রস হতে চিনি ও গুড় তৈরির প্রক্রিয়া 

এরপর ১৪৪ ডিগ্রি তাপমাত্রায় গরম করা হয়। যার ফলে ময়লা কেমিক্যাল গুলো নিচে বসে যায়। হাই টেম্পারেচারে ফোটালে সাদা ঝকঝকে রস আলাদা হয়।এবং সে রাতে পরিণত হয় সেই সেরা ফাটানো হয় আলাদা মেশিনে যাতে শক্ত করে দেওয়া হয় ইসরা কালার আর এই পর্যায়ে তৈরি হয় মিছরি বা হাইড্রো পাউডার মিশ্রিত করে বাতাসে জাতীয় বস্তু। যদিও এরশাদ চিনি হতে কিছুটা আলাদা বিশেষে করা যদিও সাদা চিনি এড়িয়ে চলার পরামর্শ দেন। 

যাকে তুলনা করা হয় বিষের সাথে আখের রস হতে চিনি ও গুড় তৈরির প্রক্রিয়া 

যাকে তুলনা করা হয় বিষের সাথে কেননা এটি আকর্ষণীয় বেশ কিছু কেমিক্যাল এর সাথে মিশ্রিত করা হয়। এবার আপনাদেরকে জানাবো আমরা যে সাদা চিনি ছোট ছোট দানা চিনে গুলো খাই এই কিভাবে তৈরি করা হচ্ছে। ১০ সুগারকে বেকার থেকে আলাদা করার জন্য একটি ছাঁকনির কাছে পাঠানো হয়। যেখানে বেশি চিনি ও শিরা আলাদা করা হয়। আর ওই শিরাকে মুলাসিরা বলা হয়ে থাকে। অর্থাৎ চিটাগুড় আর চিটাগুর অনেক ক্ষেত্রে গবাদি পশু বা মাছের খাবার হিসেবে ব্যবহার হতে দেখা যায়।

ট্রেরে এর মাধ্যমে যাওয়া চিনি গুলো একটি বিশেষ মেশিনের সাহায্যে পিষে চূর্ণ-বিচূর্ণ করা হয়। তবে বিভিন্ন ভাবে প্যাক করে বাজারে পাঠানো হয়। তবে মান্দাতোর আমলে যন্ত্রপাতি ও অনিয়মের কারণে বছরের পর বছর চিনি শিল্প নাকি লসে পড়েছে।

আপনারা জেনে থাকেন যে চিনি গুলো মাত্র কয়েক মাস আগেও বাজারে বিক্রি করা হতো ৩০ থেকে ৪০ টাকা কেজি। আর সেই চিনি বিক্রি হচ্ছে ১৪০ থেকে ১৫০ টাকা কেজি। তারপরেও চিনি শিল্পটিকে টিকিয়ে রাখতে কষ্ট হচ্ছে ।আসলে সরকারের রাষ্ট্রায়ত্ত আয় গুলো কোথায় যায় দেশের উন্নয়নে নাকি জনগণের সেবায় সেটা আপনারা বিবেচনার করবেন।

লাল চিনি তৈরির প্রক্রিয়া আখের রস হতে চিনি ও গুড় তৈরির প্রক্রিয়া 

লাল চিনি তৈরির প্রক্রিয়া। ময়মনসিংহ জেলার ফুলবাড়িয়া ঐতিহ্যগতভাবে আগের লাল চিনে উৎপাদনে বিখ্যাত। দেশীয় পদ্ধতিতে হাতে তৈরি হয় আখের লাল বর্ণের এই চিনি। ময়মনসিংহ লাল চিনির ইতিহাস ২০০ বছরের পুরনো। সাধারন আগ থেকে উৎপাদিত এই চিনির রং লাল হয় স্থানীয়ভাবে এটা লাল চিনি নামে পরিচিত। আখের এই ভরা মৌসুমে গ্রামের অনেক কৃষক আঁখ কাটা ও লাল চিনি উৎপাদনে ব্যস্ত।

দুইটি উপায়ে লাল চিনি তৈরি করা হয় আখের রস হতে চিনি ও গুড় তৈরির প্রক্রিয়া 

দুইটি উপায়ে লাল চিনি তৈরি করা হয়। ডিঙ্গি অর্থাৎ বড় ট্রেরেতে প্রস্তুত করা হয়, আগুনের জাল দিয়ে এবং টাং বা ডুক হাতে এই দুইটি উপায়ে লাল চিনি তৈরি করা হয়।

পারিবারিক অনেক কৃষক প্রজন্মের পরপরায়ণ লাল চিনি উৎপাদন করছেন। লাল চিনি তরি তে ব্যবহার কাকের পাতা ও শোভা আখের উদ্দিষ্ট স্থায়ী বাজারে জ্বালানি এবং গবাদি পশুর খাদ্য হিসেবে বিক্রি করা হয়। ফুলবাড়িয়ায় এই বছর ৮৬৫ একটু জমিতে চাষ হয়েছে।৬৯২০  টন লাল চিনি উৎপাদনের যার মূল্য প্রায় ৮৬.৫ কোটি টাকা।

কৃষক সম্প্রসার অধিদপ্তর প্রান্তিক কৃষকদের সাথে কাজ করছেন বলে জানিয়েছেন কৃষি কর্মকর্তা। দিনে দিনে উৎপাদন করছে এবং উদ্যোক্তা তৈরি করছে। এবং লাল চিনি বাজারে অনেক চাহিদা সাদা চিনির তুলনায় বা লাল চিনির বাজার মূল্য অনেক বেশি।

আখের রস হতে গুড় তৈরির প্রক্রিয়া আখের রস হতে চিনি ও গুড় তৈরির প্রক্রিয়া 

আখের রস হতে গুড় তৈরির প্রক্রিয়া। মেশিনে দিয়ে রস বের করে নিতে হয়। এবং আগের ছোবাগুলো আলাদা হয়ে করে নিতে হয়, আগের ছোবাগুলো শুকিয়ে  জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করা হয়। যেখানে ময়লা আখের রস আলাদা হয়ে যায়। এবং আখের রস গুলি প্রসেসের মাধ্যমে প্রস্তুত করা হয় ট্রাক রেলের মাধ্যমে। এর পর এক বিশাল পাত্রে জমা করা হয়।

তারপর পাইপের পাম্প সিস্টেমের আখের রস হতে চিনি ও গুড় তৈরির প্রক্রিয়া 

তারপর পাইপের পাম্প সিস্টেমের মাধ্যমে আগুনে জাল দেওয়ার জন্য একটি নির্দিষ্ট স্থানে নিয়ে যাওয়া হয়। আখের রস পরিষ্কার করার জন্য প্রয়োজনীয় উপাদান মেশানো হয়। ফোটানো হলে সেই রসের উপরে যে লিয়ার জমা হয় সেটিকে আলাদা করা হয়।

আখের রস টিকে গারো করার জন্য বেশি কিছুক্ষণ ধরে রস জাল দেওয়ার পর লালচে বনের রং হয়। ফুটন্ত রস জাল দেওয়ার পর ঠান্ডা করে তার ডাইসে ঢালা হয়। এবং বাজার জাত করার জন্য প্যাকেটিং করা হয়।

পরিশেষে বলা যায় যে আখের রস থেকে সাদা চিনি এবং লাল চিনি মেশিনের মাধ্যমে তা প্রস্তুত করা হয়।
এবং আখের রস মারাই করে মেশিনের মাধ্যমে রসকে আলাদা করা হয় এবং ছোবা ও ময়লা কে আলাদা করা হয় গুড়ের রং কালো না হয়। এবং আখের ছোভাকে রোদে শুকিয়ে তা জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করে গুর প্রস্তুত করা হয়। 


এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

rhblogger নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url